প্রচার/প্রকাশনা বিভাগ
আহলে কুরআন: হাদীস অস্বীকারের নতুন নাম।
মাওলানা আবু সালেহ মুহাম্মাদ সানাউল্লাহ, মুহাদ্দিস-অত্র জামিয়া।
আহলে কুরআন কথাটি মূলত আরবী ভাষার দুটি শব্দ। এক কথায় যার অর্থ হলো, কুরআনের অনুসারীবৃন্দ, কুরআনের ধারক-বাহক বা কুরআন মতাবলম্বী। কিন্তু সাম্প্রতিককালে একটি সত্য পথচ্যুত, গোমরাহ বা পথভ্রষ্ট সম্প্রদায় এই পদবীটি ধারণ করেছে। যাদের মতাদর্শ হচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শরিয়াতের সকল বিধি-বিধানের একমাত্র উৎসগ্রন্থ হলো শুধুই আল কুরআন। হাদীস বা নবীজির সুন্নাহর এতে কোন দখল নেই। চাই সে হাদীস যত সহীহ গ্রন্থেই বর্ণিত হোক না কেন। নির্দিধায় তারা হাদীসের প্রামাণ্যতাকে অস্বীকার করে বসে। এ গোষ্ঠিটির আবির্ভাবঃ- ঐতিহাসিক ওয়াকীদি ইবনে ইসহাক ইবনে খালদুন প্রমুখের মতে সাহাবাদের যুগেই এই বাতিল ফেরকাটির আর্বিভাব হয়েছিল। যাদেরকে ইতিহাস ও হাদীসের গ্রন্থসমুহে যুগভেদে খারেজী রাফেজী শিয়া, মুতাযিলা ইত্যাদি নামে নামকরণ করা হয়। বর্তমান যুগে এদের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে। তবে ক্রসেড যুদ্ধে পরাজিত খ্রিষ্টান বিশ্বের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এই ফিতনা নতুন ভাবে বিস্তার লাভ করে। ফলে মুসলিম বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জনপদে এদের পদচারণা পরিলক্ষিত হচ্ছে। মাতৃভূমি বাংলাদেশও এ ফিতনা থেকে মুক্ত নয়।
বর্তমান কালের আহলে কুরআনের উৎপত্তির নেপথ্য কাহিনীঃ
প্রিয় পাঠক, বর্তমান কালের আহলে কুরআনরা মৌলিকভাবে দুই ভাবে বিভক্ত। এক. শিক্ষিত বা এলিট শ্রেণী। দুই. মূর্খ বা প্রবৃত্তি পুজারী শ্রেণী। এই নিবন্ধে আমরা প্রথমত শিক্ষিত বা এলিট শ্রেণীদের পরিচয় জানব। এরা হলেন সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বা মুসলিম বিশ্বের পরোক্ষ উপনিবেশিকদের ক্রীড়ার গুটি। মুসলমানদের ধর্মীয় অঙ্গনে অস্থিরতা এবং উম্মাহর মাঝে বিভেদ ও বিভক্তি সৃষ্টি করে বিশ্ব মঞ্চে মুসলমানদের উত্থান ও অগ্রগতির পথরোধ করা এবং মুসলিম বিশ্বের সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের উপনিবেশ দীর্ঘায়িত করাই এদের মূল লক্ষ্য। এদের বৃত্তান্ত হলো, ক্রসেড যুদ্ধে ইসলামী সমর বাহিনীর নিকটে পরাজিত খৃষ্টানরা বাহ্যিকভাবে পশ্চাৎপদ হলেও মূলত তারা যুদ্ধের ছন্দ পরিবর্তন করেছিল মাত্র। অস্ত্র ছেড়ে জ্ঞান বিজ্ঞান ও বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াইয়ে নেমে পড়েছিল। রচনা করেছিল আল ইসতেশরাক বা প্রাচ্যতত্ত গবেষণার বুনিয়াদ। যার উদ্দেশ্য ছিল মানবজাতীর রাহনুমার জন্য ইসলামে যে সঞ্জীবনী শক্তি সঞ্চিত আছে তাতে সংশয় ও সন্দেহের বীজ বপন করা এবং মুসলমানদের ধর্মীয় অঙ্গনে কোন্দল মুসলিম উম্মাহর সমুজ্জল ইতিহাসে বিকৃতি সাধন, সাহাবী ও আসলাফের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি মুসলমানদের মাঝে তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে হতাশা ও ভবিষৎ সম্পর্কে নিরাশার অন্ধকারের প্রবেশ ঘটানো। প্রাচ্যতত্ত গবেষণার সুনির্দিষ্ট কাল সম্পর্কে জানা না গেলেও প্রবল ধারণা হয় যে, তৎকালিন মুসলিম শাসিত উনদুলুস বা স্পেনের রাজধানী কর্ডোভা যেখানে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার আড়ম্বর কেন্দ্র ছিল। ইলম চর্চার সেই উম্মুক্ত আসর থেকেই মূলত খৃষ্টান পাদ্রী জারবাট ফ্রান্সিস, [যিনি পরবতীতে ৯৯৯ ইং সনে রোমের ক্যাথলিক খৃষ্টানদের প্রধান পোপ নির্বাচিত হয়েছিলেন] পিরেল অনার, জেরার্ড ডি গ্রেমোনি এ, জে ওয়েনসিং প্রমুখ প্র্যাচ্যবিদরা প্রথমত আরবী ভাষা শিক্ষা গ্রহণ করেন। এবং ইসলামী ইতিহাস নিয়ে বিস্তর জ্ঞানার্জন করেন। তাদের এই জ্ঞানান্বেষা ইসলামী ইতিহাস পেরিয়ে হাদীস, তাফসির, ফিকহসহ সকল শাস্ত্রে বিস্তত হয়ে পড়ে। তারা এই জ্ঞান-গবেষণাকে ইংরেজী ভাষায় অনুবাদ করত
সারা ইউরোপে ছড়িয়ে দেয়। ফলশ্রুতিতে প্রাচ্যের এই জ্ঞান-উদ্দ্যানে অসংখ্য প্রাচ্যতত্ত কথিত গবেষকের উন্মেষ ঘটে। তাদের গবেষণার মধ্যে ছিল মুসলমানদের সত্য ইতিহাস বিকৃতি। হাদীস সংকলন পদ্ধতিকে প্রশ্নবিদ্ধকরন। নবীজির হাদীসকে সাধারণ ইতিহসের মর্যাদা দান। অধিক হাদিস বর্ণনাকারী সাহাবাদের ব্যাপারে খিয়ানত ও মিথ্যাচারের নগ্ন অপবাদ লেপন। এভাবে হাদীসের একটি বিশাল অংশকে অস্বীকারের মাধ্যমে ইসলামী শরীয়াকে অপূর্ণাঙ্গ বা অসম্পূর্ণ প্রমাণ করা। তাদের কথিত গবেষণালব্ধ জ্ঞানের আলোকে ছোট বড় অসংখ্য বই, পুস্তিকা, এবং মাসিক সাময়িকীতে ইউরোপের লাইব্রেরীগুলো ভরে উঠে। তৈরি হয় মুসলিম বিশ্বের বিরূদ্ধে ব্যবহারের অন্যতম হাতিয়ার। তাদের উক্ত অস্ত্রকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে ইউরোপের অক্সফোর্ডসহ উন্নত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চালু করা হয় ডিপার্টম্যান্ড অব দ্যা কুরআন, ডিপার্টম্যান্ড অব দ্যা হাদীস ইত্যাদি নামে একাধিক ইসলামীক অনুষদ। যেগুলোর ডিন অব দ্যা ডিপার্ডম্যান্ড বা অনুষদ প্রধান হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন এ, জে, আরবারি, আলফ্রেড জিওম, ব্যারন কারা, ডি ভক্স, এইচ,এ,গিবসহ ইহুদী প্রাচ্যবিদ গোল্ড যিহার এর মত অসংখ্য খ্যাতিমান অধ্যাপক। এদিকে ইসলামিক স্কলার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে কিংবা উন্নতি ও প্রগতির অন্বেষণে মুসলিম বিশ্বের মেধাবী তরুণরা ইউরোপে পাড়ি জমিয়ে আমাদের এই শত্রুদের হাতে কথিত উন্নত শিক্ষায় প্রতিপালিত হতে থাকে। এবং উম্মাহর আসলাফের জ্ঞান-গবেষনার তুরাছকে তুচ্ছ জ্ঞান করত: তাদের ব্যাপারে বিদ্বেষী হয়ে উঠে। ফলে উম্মাহর সন্তান পরিণত হয় উম্মাহর শত্রুতে। এ প্রসংগে মিশরের ড: আলী হাসান আব্দুল কাদিরের [যিনি মিশরের আল আযহারে দীর্ঘকাল পড়া-লেখার পর জার্মানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পি, এইচ, ডি অর্জন করেছিলেন] একটি বক্তব্য উল্লেখ করা যেতে পারে। জার্মানি থেকে ফেরার পর মিশরের আল আযহারে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে এক সেমিনারে বলেছিলেন, আমি প্রায় চৌদ্দ বছর আল আযহারে অধ্যায়ন করেছি। কিন্তু ইসলাম বুঝিনি। জার্মানে গিয়ে সঠিক ইসলাম বুঝেছি [সূত্র:-আল ইশতিসরাক ওয়াল মুশতাসরিকুন, ডঃ মুস্তফা সিবাঈ] প্রিয় পাঠক, এরাই হলেন মুসলিম বিশ্বের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে থাকা প্রাচ্যবিদদের শিষ্য। যারা কখনও আহলে কুরআন, মুনকিরে হাদীস, মুজাদ্দিদ ফিদ দ্বীন ইত্যাদি নামে পরিচিত। এবং বর্তমান কালের কথিত শিক্ষিত বা এলিট শ্রেণীর আহলে কুরআন বা কুরআন অনুসারিরা এদেরই ভাব শিষ্য। প্রিয় পাঠক, কথিত কুরআন অনুসারিদের দ্বিতীয় যে শ্রেণীটি আছেন তারা হলেন মূর্খ বা প্রবৃত্তি পুজারী। এদের আলাদা কোন পরিচয় নেই। তবে এরা কখনও মূর্খতাজনিত কারণে কুপ্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে অথবা স্বার্থানেস্বী মহলের হালুয়া রুটির মোহে নবীজির [সা:] হাদীসকে অস্বীকার করে বসে। তারা নিজেদেরকে কখনও আহলুল করআন, মুজাদ্দীদ, কুতুবুয যামান, বরং কখন নবীও দাবী করে বসে। তথাকথিত আহলে কুরআনদের মতবাদ বা আকীদা-বিশ্বাস:- উপরোল্লোখিত দুই শ্রেণীর আহলে কুরআনদের মাঝে শাখাগত কিছু বিষয়ে মতানৈক্য স্বত্তে¦ও তাদের মৌলিক আকীদা ও বিশ্বাস অভিন্ন। নিম্নে তাদের মৌলিক মতবাদগুলো তুলেধরা হলো। ১. তারা মনে করে ইসলাম শুধুই আল কুরআন। নবীজির হাদীস ইসলামের অংশ নয়। ২. কুরআন ব্যতীত হাদীস ইসলামী শরিয়াতের দলীল নয়। ৩. তবে যে সকল হাদীস মুতাওয়াতির সেগুলো শরিয়াতের দলিল হতে পারে, অন্যগুলো নয়। ৪. এবং যে সকল হাদীস কুরআনের সরাসরি ব্যাখ্যা করে সেগুলো শরিআতের দলিল হতে পারে, অন্যগুলো নয়। ৫. সকল হাদীস নবীজির সাহাবাদের জন্য দলিল, আমাদের জন্য নয়। ৬. নবীজির হাদীস সকলের জন্য দলিল হতো কিন্ত আমাদের কাছে সন্দেহাতীতভাবে পৌছেনি বিধায় তা মানতে আমরা বাধ্য নয়। কথিত আহলে কুরআনরা সকলেই যে উল্লেখিত সকল মতবাদে বিশ্বাসী তা নয়। বরং তাদের একেক শ্রেণী একেকটা মতবাদে বিশ্বাস করে। নিম্নে কথিত আহলে কুরআনদের একটি তালিকা ও বিশেষ কিছু মতবাদ পেশ করা হলো। এদের কেউ পূর্নাঙ্গ হাদীসের ভান্ডারকে অস্বীকার করে। আবার কেউ-কেউ আংশিক অস্বীকার করে আহলে কুরআন সাজার চেষ্টা করেন। এদের তলিকায় আছেন #ডঃ তাওফিক সিদ্দিকী। যিনি সায়্যিদ রশীদ রেজা কতৃক প্রকাশিত আল মানার পত্রিকার [৭ ও ১২ তম] সংখ্যার দুটি নিবন্ধে আল ইসলামু হুয়াল কুরআনু ওায়াহদাহ অর্থাৎ “ইসলাম শুধুই আল কুরআন” শিরনামে হাদীসের প্রমাণ্যতাকে অস্বীকার করত:কথিত কুরআন পন্থীদের অন্তর্ভুক্ত হন। #ডঃ ইসমাইল আদহাম। মিশরের এই ব্যক্তি মনে করতেন ইসলাম শুধুই আল কুরআন। তিনি তারিখুস সুন্নাহ শিরনামে এক নিবন্ধে লিখেন, সিহাহ সিত্তাহ সহ হাদীসের যে ভান্ডার আমাদের কাছে আছে, তা আদৌ কোন সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত নয়। এর অধিকাংশ মিথ্যা ও বানোয়াট। #মিশরের ডঃ ত্বহা হুসাইন। তিনি স্বীয় গ্রন্থ আল আদাবুল জাহিলীতে প্রখ্যাত প্রাচ্যবিদ ম্যারজালিত এর সকল মতবাদ নকল করত: নিজের গবেষণালব্দ সত্য জ্ঞান হিসাবে জাহির করেছেন। এবং সেখান তিনি হাদীসের প্রমাণ্যতাকে অস্বীকার করে কথিত আহলে কুরআনদের অন্তর্ভুক্ত হন। #ডঃ আহমাদ আমীন। তিনি প্রাচ্যবিদ গোল্ড যিহার এর অনুসরণে তার লিখিত “ফাজরুল ইসলাম ও যুহাল ইসলাম” নামক দুটি গ্রন্থে হাদীস সংকলনের ইতিহাস, হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবী ও তাবেয়ীদের বিষাদগার করে প্রকারন্তে হাদীসের প্রমাণ্যতাকে অস্বীকার করত:কথিত আহলে কুরআনীদের অন্তর্ভুক্ত হন। * আবু রাইয়া। তিনি স্বরচিত “আযওয়া আলাস সুন্নাতিল মুহাম্মাদিয়া” নামক গ্রন্থে হাদীস সংকলনের ইতিহাস বর্ণনা করতে গিয়ে বর্ণনাকারী সাহাবাদের শানে বিশেষত হযরত আবু হুরাইরা [রা:] এর শানে চরম বাজে কথা লেপন করেছেন। এবং হাদিসের একটি বিশাল অংশকে অস্বীকার করেন। #ডঃ আলী হাসান আব্দুল কাদির। তিনি নাযরাতুন আম্মাতুন ফি তারিকিল ইসলামী নামক স্বরচিত গ্রন্থে হাদীসের প্রমাণ্যতাকে অস্বীকার করত: কথিত আহলে কুরআনদের অন্তর্ভুক্ত হন। #ভারত উপমহাদেশের আসলাম জয়রাজপুরী। তার মতে হাদীসের কোন শরয়ী গুরত¦ নেই। তিনি সরাসরি হাদীস অস্বীকার করে আহলে কুরআন নামে একটি দল গঠন করেন। এবং হাদীস “মানুষের ধারণাপ্রসূত অলিক ও অনির্ভরযোগ্য কথা” প্রমাণের জন্য “ইলমে হাদীস” নামে একটি জ্ঞানগর্ভ রচনা লিখেন। #মিষ্টার গোলাম পারভেজ। তার মতে আল কুরআনই হলো ইসলাম। হাদীসের বিশাল ভা-ার অনারব লোকদের সৃষ্ট ষড়যন্ত্র ও মিথ্যাবুলি। তাই তা শরিয়াতের উৎস হতে পারে না। তিনি আরো দাবী করেছেন সালাতের বর্তমান রূপরেখা কুরআনের কোথাও নেই। এটি অগ্নিপূজকদের থেকে আহরিত। তিনি “তুলুয়ে ইসলাম” নামে একটি মাসিক পত্রিকা প্রকাশ করেন। * স্যার সৈয়দ আহমাদ খান বেরেলবী। এই ভদ্র লোক ভারত বর্ষে হাদীস অস্বীকারের ফিতনা সূচনা করেন। তিনি হাদীসের সনদের উপর তেমন আঘাত না করলেও অনেক মতন তার আকল বা জ্ঞান মুতাবিক না হওয়ার কারণে অস্বীকার করা অপব্যাখ্যা করা বা মতনে বিকৃতি সাধন করার ক্ষেত্রে পটু ছিলেন। স্বরচিত গ্রন্থ তাযকিয়া তে তার মতাদর্শের প্রতিফলন ঘটেছে। এছাড়াও হাদীস অস্বীকারের ক্ষেত্রে আব্দুল্লাহ চকড়ালভী, মৌলবী আহমাদ দ্বীন আমৃতসরী, নবুওয়াতের মিথ্যা দাবীদার মির্জা গোলাম আহমাদ কাদিয়ানী উল্লেখযোগ্য।
বাংলাদেশে কথিত আহলে কুরআনদের ফিতনা:-
বাংলাদেশে যারা হাদীস অস্বীকার বা আহলে কুরআন ফিতনার সূচনা করেছেন। তারা নিবন্ধে উল্লেখিত মুনকিরে হাদীস বা আহলে কুরআনদেরই হয়ত শিষ্য ভাবশিষ্য বা দোসর। এদের ভিন্ন কোন বিশ্বাস বা মতবাদ নেই। বরং উপরে যে মতবাদের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাই এদের মতাদর্শ। এদের মধ্যে * বরকতুল্লাহ কোমরগঞ্জী ও তার অনুসারিরা। তার দাবী হলো, আমরা হাদীস মানি না। কারণ হাদীস মানে কথা। তো কুরআর ব্যতীত নবী মুহাম্মাদের কথা মানতে আমরা বাধ্য নই। এই ভন্ড মূর্খ পীরের তত্ত্বাবধানে শতাব্দির সূর্য নামে একটি মাসিক সাময়িকী প্রকাশিত হয়। #প্রফেসর ডাঃ মতিয়ার রহমান। তিনি প্রকাশ্যে নিজেকে মুনকিরে হাদিস বা আহলে কুরআন দাবী না করলেও তার মতাদর্শে হাদিসের ইনকার এবং ইসলাম শুধুই আল কুরআন এই চেতনা বিদ্যমান। প্রথমে কোন-কোন আলেম তার মতাদর্শ বুঝতে না পারলেও পরবর্তীতে উম্মাহকে তার সম্পর্কে সতর্ক করেছেন। তার প্রতিষ্ঠিত কোরআন রিসার্চ ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত বই এবং লেকচারে তার ভ্রান্ত বিশ্বাসের প্রমাণ মেলে। #সোশ্যাল মিডিয়া যে সকল কথিত কুরআন পন্থিদের পদচারণায় আন্দোলিত তাদের মধ্যে #আমীর আলী, আদম নুর। এরা খাহেশাতের পূজারি। অনেকটা মূর্খতা সুলভ বক্তব্য রাখে। * তরুণ যুবক তথাকথিত কুরআন পন্থি সজল, রওশন, তাজ হাশমী। এরা সকলেই প্রাচ্যবিদদের ভাবশিষ্য। এদের দলিল-প্রমাণ উপস্থাপন হুবহু প্রাচ্যবিদদের এষ্টাইলে #কুষ্টিয়া জেলার কথিত আহলে কুরআন সংগঠন। #কুরআন মানি মিডিয়ার এম. ডি. হানিফ। তার দাবী সকল হাদীস মানব রচিত। এবং তা শয়তানের বাক্য। পক্ষান্তরে আল্লাহর রচিত সকল হাদিস আহসানুল হাদীস। আর এটিই ইসলাম। # বায়েজিদ খান পন্নী। ১৯৯৫ ইং সনে প্রতিষ্ঠিত “হিযবুত তাওহীদ” এর জনক টাঙ্গাইল জেলার করটিয়া গ্রামের এই হোমিও ডাক্তারের মতাদর্শে শুধু হাদিসের ইনকার নয় বরং ইনকারে ইসলামও রয়েছে। তার বক্তব্য হলো বর্তমান আমরা যে ধর্মটিকে এসলাম হিসাবে দেখছি সেটা প্রকৃত এসলাম নয়। [সূত্র:- এসলাম শুধু নামে থাকবে-পৃ ৯]
Add New Comment